World Day against Child Labour.
অধ্যাপক ডঃ এম এস কবীর জুয়েল।
আজ(১২-ই জুন) আন্তর্জাতিক শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস—-(World Day against Child Labour)…আমার ব্যক্তিগত সংস্থ্যা “মন-ঘর” এর শাখা গুলো মূলতঃ উত্তরা-গুলশান-ববসুন্ধরা ও খিলগাঁও এ অবস্থিত, প্রায় সবগুলোই উত্তর ঢাকায় এবং খিলগাঁও ব্যতিরেকে সবগুলোতেই কেবল ধনীদের সন্তানগণ-ই চিকিৎসা ও মূখ্য কাউন্সিলিং পেয়ে থাকেন। কিন্তু দক্ষিণ ঢাকার শিশুশ্রম নিয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে আমরা শুধু অবাক হইনি, আত্মানুশোচনায় কষ্ট পেয়েছি, অত্যন্ত গর্হিত আইন অমান্যকারী অনৈতিক কর্মে নিয়োজিত করা হচ্ছে এই কোমলমতি শিশুদের, যা গা শিউরে ওঠার মতো ভয়ংকর ও বর্বরোচিত –শিশুশ্রম বলতে আমরা ঢাকার রাজপথ ও অলিগলিতে ‘কাগজ টোকানো’ কিংবা ভাগাড়(Dustbin)থেকে ভাংগাড়ির দোকানের জন্য ধনীদের ফেলে দেয়া মূল্যবান জিনিস কুড়ানো,কারখানায় ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম দেয়া,টেম্পো বা বাসের হেল্পার,ইট বা পাথর ভাঙা ইত্যাদি -ই জানতাম কিন্তু নীচের(২য় ছবিতে তাদের নিজস্ব লিফলেট হাতে) ৩ পুরুষ শিশুর ভয়ংকর ও অনৈতিক শিশুশ্রম-এর কাহিনী আমাদের এতোটাই প্রভাবিত করেছিলো যে, আমরা আন্তর্জাতিক এন.জি.ও ‘CARITAS’ – পরিচালিত ‘বারাকা শিশু নিবাস’ গুলোকে আমাদের ‘স্যার সলিমূল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতাল’-এর মানসিক বিভাগের ‘Child Psychiatry OPD’ বা ‘শিশু মনোরোগ বহি:র্বিভাগ’ -এর অন্তর্ভূক্ত করে নেই ; মানবিক দিক বিবেচনায় ওদের সাথে সম্পূর্ণ অলাভজনক চুক্তিতে এই বিপথগামী শিশুদের জন্য আমাদের পুরো “Child Psychiatry Team” এগিয়ে এসছে; মাঝে মাঝে ওদের শিশু নিবাস পরিদর্শন করে আমাদের শেখানো ‘Behavioural Modification Program’-সমূহ যথাযথ রুপে পালিত হচ্ছে কিনা যাচাই করা হয় ও ‘Behavioural Activation Therapy’ এর প্রয়োগ করে নতুন কাংখিত আচরন গুলো ধৈর্য্য সহকারে পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে শিশুদের কচি মনে স্থায়ী করা হচ্ছে কিনা -তা নির্নয় করা হয় — আমাদের সাথে রয়েছে “Child Developmental Neurologist, Child Psychologist, Child Behaviour Remodeling Therapists,Therapeutic Counsellors”….আর আমরা(Psychiatrists) বরাবরের মতোই অতপ্রোতভাবে যুক্ত রয়েছি।সচেতনতার জন্য আমরা জানিয়ে দিচ্ছি কি ধরনের Criminal Acts গুলোতে এই নীরিহ বাচ্চাগুলোকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে –১) ভয়ংকর সিধেল চুরি বা ছিচকে চুরি বা পকেট মার – Major or petty Theft or Snatching.২) প্রকাশ্য দিবালোকে লোকচক্ষুকে ফাঁকি দিয়ে মাদক পরিবহন — Drug Trafficking. ৩) মেয়ে শিশুদের(যাদের ছবি সংগত কারনেই এখানে নেই) দিয়ে শিশু পতিতাবৃত্তি( For perverted Pedophilics) ৪) ছেলে শিশুদের দিয়ে পতিতাদের খদ্দের জোগানো, এবং প্রায়শঃই সমকামী Pedophilic পুরুষদের জন্য নাদুসনুদুস পুরুষ বাচ্চাগুলোকে ব্যবহার করা।৫) এ ছাড়াও Human Trafficking এর মাধ্যমে সীমান্ত পেরিয়ে আশ পাশের দেশে পাচার করে মানব অঙ্গ প্রত্যঙ্গের বিভৎস ব্যবসা।কারিতাস একটি আন্তর্জাতিক মানের ‘এন.জি.ও’ হওয়ায় তাদের ব্যাপক ফান্ড রয়েছে, তারা বেশ কিছু DIC (Drop in Cente)এর মাধ্যমে সদরঘাটসহ নগরীর বিভিন্ন স্থান থেকে এই ভাগ্য বিড়ম্বিত শিশুদের সংগ্রহ করে তাদের পরিচালিত শিশু নিবাস গুলোতে নিয়ে আসে, আর আমি আমার (বিভাগীয় প্রধান)নিজস্ব কক্ষটিকে ছেড়ে দিয়েছি এই অসহায় শিশুদের কল্যাণার্থে। আমার সাথে যারা এ মহৎ কর্মে যুক্ত রয়েছে, তাদের সকলের নিকট আমি কৃতজ্ঞ,তাদের আন্তরিকতা ও সহযোগীতার মাধ্যমেই আমি এই অনাথ বিপথগামী শিশুদের জন্য কিছুটা হলেও সাহায্যে আসতে পেরেছি।