বাক স্বাধীনতা হীনতায় কে বাচিঁতে চায় হে কে বাচিঁতে চায়, দাসত্ব শৃঙ্খল কে পরিবে পায় হে কে পরিবে পায়।

অধ্যাপক ডঃ এম. এস. কবীর জুয়েল।

“বাক স্বাধীনতা” হীনতায় Commonwealth ভূক্ত দেশ সমূহের নাগরিকদের কেমন মানসিক সমস্যা হতে পারে কিংবা তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর কেমন প্রভাব পড়তে পারে, সে বিষয়ক কর্মশালার পর একটি গবেষনা শুরু হবে, Commonwealth Foundation থেকে প্রায় প্রতিটি দেশেই কিছু সাইকিয়াট্রিস্টকে অন্তর্ভুক্ত করেছে, আমার পরিধী Arab Peninsula & Central Africa এর নাগরিক ও নিজ দেশের মানুষগুলো, এ দেশে সরাসরি ডাটা নেয়া যাবে, আর আরব ও আফ্রিকার কিছু দেশের নাগরিকদের বিভিন্ন পন্থায় ডাটা নিতে হবে, সে বিষয়ক নির্দেশনা ও রয়েছে, এক সময় আফ্রিকান মুসলিম দেশগুলোর চিকিৎসকদের সাথে কাজ করেছি, সুতরাং সেই সুযোগে সমূহ সম্ভাবনা এখনো রয়েছে কারন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অনেকেই এখন নিজ দেশে ফিরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত আছেন কেবল মিশরীয়(Egyptian)–চিকিৎসকদের একটা বিরাট অংশ স্বৈরশাসক জেনারেল সি. সি কে মেনে না নিয়ে সৌদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। Common Wealth Foundation ঘোষিত গবেষনা কর্মপন্থার ধরনে গতানুগতিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় কোভিড কালীন সময়ে বাটপার রিজেন্ট শাহেদ কর্তৃক ৬০০০ ভূয়া রিপোর্ট ও প্রবাসীদের মাঝে তার ভয়াবহ মানসিক প্রভাব নিয়েও আলোচনা করে যেতো কিংবা ‘জলবায়ু পরিবর্তন হেতু খেটে খাওয়া মানুষদের আটপৌরে জীবনের কাহিনী-ও তুলে ধরা যেতো কিন্তু এতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাসমূহ উঠে আসতোনা।
আরবের রাজতান্ত্রিক রাজ্য সমূহে আর মধ্য ও পূর্ব আফ্রিকার দেশগুলোতে বাক স্বাধীনতা লাভের জন্য মানুষের হাহাকার-এর আমি নিজে প্রত্যক্ষদর্শী, নিজ দেশে DSA (Digital Security Act) এর শিকার হয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে লেখক মোস্তাক আহমেদ যখন মারা যায় এবং কার্টুনিস্ট কিশোর মুমূর্ষপ্রায় ঠিক তখন আমি গুলশানের একটি ক্লিনিকে মোস্তাকের মানসিক রোগী স্ত্রীকে কাউন্সিলিংরত অবস্থায় ছিলাম, সে পর পর দু-বার আমার অধীনে ভর্তি হয়েছিলো, প্রথমবার পুরোপুরি Psychosis (অসাভাবিক কথা ও কর্ম)অবস্থায় পেয়েছিলাম, পরের বার ‘Psychotic Depression'(অস্বাভাবিকতা সহ মারাত্মক বিষন্নতা), স্বামীর হঠাৎ গ্রেফতার ও বার বার তারিখ পিছিয়ে তার জামিন না হওয়ায় অনিশ্চিত গন্তব্যে পৌঁছেছিলো ভদ্রমহিলা, অথচ মিসেস মোস্তাক একজন সুস্থ ও উচ্চ শিক্ষিতা নারী উদ্দোক্তা ছিলেন, Zoology –তে মাস্টার্স সম্পন্ন করে স্বামীর সাথে মিলে বাংলাদেশে প্রথম বাণিজ্যিক কুমির চাষ প্রকল্প শুরু করেছিলেন, যতোটুকু জানতে পেরেছিলাম করোনাকালীন সময়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার চরম অব্যবস্থাপনা ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন তারা দুজনেই, সেই সাথে বিতর্কিত একজন ব্যবসায়ী ও ব্যংকার কর্তৃক Farmers Bank গ্রাস করে নেওয়াকে একটি স্যটায়ার কার্টুনের মাধ্যমে জণগনের নিকট তুলে এনেছিলেন তারা, ফলে দুজনকেই আচানক রাতের আঁধারে সাদা পোশাকে বলপূর্বক তুলে নিয়ে যায় কথিত সেই বিশেষ বাহিনী।

এ হেন আরো অনেক ঘটনার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অভিজ্ঞতা আমার রয়েছে, ভূক্তভোগীগণ পরবর্তীতে নিজেরাই রোগী হয়ে অথবা তাদের নিকটজনেরা রোগীনী হয়ে আমার নিকট এসছে, সন্তানেরা ‘Conduct Disorder’ বা আচরনগন সমস্যা Phobia বা চরম আতংক ভয়ে এখনো ভূগছে। এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সদাই এ বিষয়ে ই-মেইলে আমাকে জিজ্ঞাসা করে থাকে, তাদের মান অনুযায়ী ‘Prison Mental Health’- এর দিকটা কতোটুকু দেখা হয়, তা নিয়ে একজন সরকারী Psychiatrist হিসেবে আমাকে জওয়াবদিহী করতে হয়, তাছাড়া চরম স্বেচ্ছাচারী বিতর্কিত ‘Digital Security Act’- এর কারনে ‘Freedom of Expression’ কি পরিমান বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক ক্ষেত্রে সাধারণ সচেতন প্রতিবাদী নাগরিকদের মানসিক সাস্থ্যে ইহার প্রভাব নিয়েও আলোচনা হয়েছিলো।
আমি আমার দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের মাঝে আজ কেবল উদ্দেগ-উৎকন্ঠা-হতশা আর একরাশ শংকা দেখতে পাচ্ছি, তা মোটেও গ্রহনযোগ্য নয়; সচেতন সবাইকে এ নিয়ে কথা বলতে হবে, ভাবী প্রজন্মকে বাঁচাতে হবে।
দেশের সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখেও নাগরিকদের মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশে সহায়ক ভূমিকা রাখতে সচেষ্ট থাকতে হবে।

Leave a Comment