মনোদৈহিক রোগে আক্রান্ত একজন রোগীর অনুভুতিঃ

শারীরিকঃ

  • সারাক্ষণ বিছানায় শুয়ে থাকা, অতিরিক্ত মাত্রায় ঘুম হওয়া।
  • শরীর সবসময় পাথরের মতো ভারী হয়ে থাকা, শরীরে ব্যথা, ওঠাবসা করতে, হাটতে, চলাফেরা করতে কষ্ট হওয়া, হাতে পায়ে সারা শরীরে একদমই শক্তি না পাওয়া।
  • বডি সেন্সেশন ও বডি ফিলিংস একদমই কাজ না করা, সবসময় শরীরে অস্বাবাভিক শীত শীত লাগা এবং খারাপ লাগা।
  • শরীর একদম রিলাক্স না হওয়া, কোনো কিছুর গন্ধ বুঝতে না পারা। এক মিনিটের পরিশ্রমে শরীর ক্লান্ত হয়ে যাওয়া এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়া। শরীরে সব সময় নার্ভাসনেস কাজ করা, ইচ্ছা অনুযায়ী শরীরের অঙ্গ গুলো সাবলীল ভাবে নড়াচড়া করতে না পারা এবং অস্বস্তি কাজ করা।

মানসিকঃ

  • কখন কয়টা বাজে, কখন সকাল, সন্ধ্যা, বিকাল, রাত হচ্ছে কিছুই বুঝতে ও বলতে না পারা।
  • একই কাজ বারবার করার পরও নতুন লাগা এবং সবকিছু ভুলে যাওয়া। কোনো কিছু মনে করতে না পারা।
  • কোনো কিছু থেকে আনন্দ না পাওয়া।
  • পানির তৃষ্ণা না লাগা, কোনো খাবারের স্বাদ না পাওয়া।
  • যখন খিদে লাগে তখন অতিরিক্ত মাত্রায় খিদে লাগে।
  • বাথরুমে যাওয়ার অনুভূতি কাজ না করা, গ্যাস্ট্রিক এর অনেক সমস্যা হওয়া, খাবার হজম না হওয়া। এই সমস্যাগুলোর জন্য সবসময় একটা অসহ্য অবস্থার মধ্যে থাকতে হয়।
  • দশ দিন ,পনেরো দিন এর মধ্যে একবার জোর করে গোসল করতে হয়।
  • ব্রেইন কাজ না করা, নিজের যত্ন একদমই নিতে না পারা, অপরিষ্কার ও অপরিচ্ছন্ন জীবন যাপন কর, চুল দাড়ি বড় হয়ে থাকা, শরীরে ময়লা জমে থাকা, নোংরা জামাকাপড় পরা।
  • পৃথিবীর সবকিছু অর্থহীন লাগা এবং জীবনে কোনো আশা কাজ না করা। কোনো কাজকর্ম করতে না পারা, সারাক্ষণ অলসভাবে বিছানায় শুয়ে থাকা।
  • শরীর হালকা পাতলা না হওয়া। পুরো শরীরে শক্তি না পাওয়া। হাতের আঙুলে একদমই শক্তি না পাওয়া এবং হাত দিয়ে কোনো কিছু অনুভব করতে না পারা, হাত দিয়ে কোনো কাজ করতে না পারা। পুরো শরীর ভারী হয়ে থাকা যার ফলে স্বাবাভিক ভাবে ওঠাবসা করা, হাঁটা, চলাফেরা করা ,মুখ দিয়ে কথা বলতে কষ্ট হওয়া, মুখ ভারী হয়ে থাকে যার ফলে স্বাভাবিক ও নরমাল ভয়েসে কথা বলতে পারা যায় না।
  • শরীরে স্বাভাবিক ক্লান্তি আসে না এবং শরীর রিলাক্স হয় না।
  • কোন ধরনের ইমোশন কাজ না করা এমনকি বিপরীত লিঙ্গের প্রতিও। কারো কোনো কথা সহ্য করা যায় না,অল্পতেই রাগ হয়। কোনো ধরণের আবেগ অনুভতি একদম এ কাজ করে না।
  • সারাক্ষণই সব সমস্যার কথা মাথায় ঘুরা, কোনো অবস্থাতে এসব চিন্তা বন্ধ করতে পারা যায় না এবং স্থির থাকা যায় না।
  • সবসময় একা একা থাকতে ভাল লাগে, কারো সাথে আবেগ অনভুতি শেয়ার করতে পারা যায় না।
  • কোথায় আছে বুঝতে পারা যায় না, আশেপাশে কি আছে সেটা বুঝতে পারা যায় না। সব কিছু অন্ধকার মনে হয়।
  • কোনো অবস্থাতেই সকালে ঘুম থেকে উঠা যায় না। মনে হয় শরীরে কিছু একটা ভর করে রেখেছে।
  • কখন কার সাথে কিভাবে ব্যবহার করতে হবে সেটা বুঝতে পারা যায় না।
  • হাত পায়ে মাঝে মধ্যে শক্তি না থাকা এবং মাঝে মধ্যে শক্ত হয়ে থাকা।
  • মাঝে মধ্যে আশা একদমই কাজ না করা। অহেতুক একটা ভয় কাজ করে, শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যায়, শরীরে শীত শীত করে।
  • চোখে সবসময় অস্পষ্ট দেখা যায়, ব্রাইন কাজ করে না।
  • কারো সাথে কথা বললে ভয়েসের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করা এবং শরীর নার্ভাস লাগা। সবসময় চুপচাপ থাকা।
  • কোন কিছুই মনে না থাকা, অতীত মনে না থাকা, সবকিছুই তাৎক্ষণিকভাবে ভুলে যাওয়া।
  • টিভি দেখা, ফেইসবুক ব্যবহার করা, ইউটিউব ব্যবহার করা, কারো সাথে মিশা, কথা বলা ইত্যাদি কোন কিছু থেকে আনন্দ খুঁজে না পাওয়া।
  • ঠাণ্ডা মাথায় কোন কিছু চিন্তা করতে না পারা।
  • স্থির হয়ে বসতে দাঁড়াতে না পারা।
  • কোন পরিশ্রম করতে না পারা, অল্প পরিশ্রমে খুব বেশী ক্লান্তি চলে আসে।
  • চারপাশ নীরব নিস্তব্ধ মনে হওয়া, কান গুলো স্তব্ধ মনে হওয়া।

মনোদৈহিক রোগে আক্রান্ত রোগীদের সাধারণভাবে উপরে উল্লেখিত শারীরিক ও মানসিক উপসর্গসমূহ দেখা যায়। নিজের বা পরিবারের কারো মধ্যে এধরণের উপসর্গ দেখতে পেলে দেরী না করে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হউন এবং দ্রুত সুস্থতা লাভ করুন।

যোগাযোগঃ ডাঃ এম এস কবির জুয়েল।