অটিজম (Autism) একটি নিউরোডেভেলপমেণ্টাল ডিজঅর্ডার বা বিকাশগত সমস্যা যা তিন বছর বয়স হবার পূর্বেই প্রকাশ পায়। অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা সামাজিক আচরণে দূর্বল হয়, পারস্পরিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে কম সক্ষম হয়। তারা অতিরিক্ত জেদী হয়ে থাকে এবং নিজেকে বিচ্ছিন্ন ও গুটিয়ে রাখার মানসিকতাসম্পন্ন হয়ে থাকে। মানসিক সীমাবদ্ধতা ও একই কাজ বারবার করার প্রবণতা থেকে তাদের শনাক্ত করা যায়।

অটিজমের কারণ সর্ম্পকে এখনও কোনও পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়নি। তবে গবেষকরা মনে করেন, জেনেটিক, নন-জেনেটিক ও পরিবেশগত প্রভাব সমন্বিতভাবে অটিজমের জন্য দায়ী। শিশুর বিকাশে প্রাথমিক পর্যায়ে এটি সৃষ্টি হয়। অনেকে এর কারণ হিসেবে পারিপার্শ্বিক ঝুঁকির (যেমন: টিকা নেবার সীমাবদ্ধতা) কথা বললেও কোনও গবেষণায় এর প্রমাণ পাওয়া যায় না।

এক-দুই বছর বয়সে শিশুর আচরণে এ রোগের লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। অভিভাবকরাই সাধারণত প্রথমে এ রোগের লক্ষণ বুঝতে শুরু করেন। লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া জরুরি। রোগ নির্ণয়ে মূলত শিশুর সম্পূর্ণ আচরণের ইতিহাস এবং স্নায়ুতাত্ত্বিক গণণার হিসাব বিবেচনা করা হয়। আক্রান্ত শিশুর পরিচর্যা করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আচরণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে আক্রান্তের পরিচর্যা সাহায্যে আক্রান্তের চিকিৎসা করাই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য এবং কার্যকরী। অটিজমের মাত্রা অত্যধিক বেশি হলে রোগীদের স্বাধীন জীবনযাপনের সম্ভাবনা খুব কম থাকে তবে কম মাত্রার রোগীদের বেলায় এ ক্ষেত্রে পূর্ণ বয়সে সুস্থতা আসার সম্ভাবনা বেশি। তবে এ রোগের ক্ষেত্রে একে জীবনযাপনের একটি বিশেষত্ব মনে করে চিকিৎসা করাই ভাল।

অটিজমের প্রকাশ বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন হারে ঘটে। আধুনিক গবেষণা মতে, প্রতি হাজারে ১-২ জন অটিজমে এবং এক হাজারে ৬ জন এএসডি রোগে আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষ করে ১৯৮০ সালের পর থেকে আক্রান্ত হয়েছে জানা গেছে এমন রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। তবে এর পিছনে উন্নত রোগ নির্ণয় পদ্ধতি এবং সচেতনতা বৃদ্ধিই মূল কারণ বলে বিবেচিত হয়।

অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুরা সাধারণত অপরের সাথে ঠিকমতো যোগাযোগ করতে পারে না।   অটিস্টিক শিশুরা অস্বাভাবিক আচরণ করতে পারে বা আকাঙ্ক্ষিত আচরণ করতে অক্ষম হতে পারে। নির্দিষ্ট বয়সে স্বাভাবিক আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটলেও পরবর্তীকালে তা হারিয়ে যেতে পারে। আবার নির্দিষ্ট সময় থেকে দেরিতেও সাধারণ ব্যবহারগুলোর দেখা যেতে পারে। এই ডেভেলপমেণ্টাল বিলম্বতার মাত্রা নির্ণয়ের ক্ষেত্রে সকল চিকিৎসকেরা একই সিদ্ধান্তে নাও আসতে পারেন।

আপনার শিশুর মাঝে যদি অটিজমের  লক্ষণ দেখতে পান, তবে দেরী না করে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হোন।

যোগাযোগঃ http://drkabirjewel.com/about/

তথ্যসূত্রঃ https://www.wikipedia.org/