Anniversary Reaction
অধ্যাপক ডঃ এম. এস. কবীর জুয়েল।
‘Anniversary Reaction’- বলে মনোরোগবিদ্যা(সাইকিয়াট্রি)-তে একটি টার্ম আছে,Perhaps this feeble minded Japanese developed such type of Syndrome.আমাদের সকলের-ই নিশ্চয় মনে আছে সেই বর্রবতম ‘হলি আর্টিজেন’ জংগী হামলায় ক-জন জাপানীও নিহত হয়েছিল,গত ১-লা জুলাই আমরা তাদের সকলকে পুনরায় শোকাহত চিত্তে স্মরণ করেছি,ফুলেল শোভায়শ্রদ্ধার্ঘ অর্পণ করেছি। নিহত জাপানীরা মূলতঃ JICA ও গার্মেন্টস শিল্পের সাথে জড়িত ছিলো। আমাদের উন্নয়ন সহযোগী বন্ধু দেশগুলোর মধ্যে জাপানীদের অবদান সবচেয়ে বেশী,সুতরাং ওদের প্রতি সদাই আমাদের আমরা বন্ধুসুলভ আচরণে অভ্যস্ত । সর্বোপরি ২০০৮-এ জাপান থেকে ফেলোশিপ অর্জনের সময় ওদের সেই অমায়িক ব্যবহার এবং শিষ্টাচার আমি আজো ভূলিনি। আজ রাতে দু:শ্চিন্তাগ্রস্থ ও ভয়কাতুরে এই জাপানী ভদ্রলোক (মি.শাইতো) এক বাংলাদেশী পড়শীর সহায়তায় আমার ডিপ্লোমেটিক জোনের চেম্বারে এলেন,প্রাথমিকভাবে কিছু গার্মেন্ট ব্যবসা সংক্রান্ত টাকা পয়সার কারণ উল্লেখ করলেও, তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ইতিহাস জেনে বুঝলাম,সে এখানে একাকী চলা ফেরা করেন,স্ত্রী-সন্তান কেউ সাথে থাকেনা। প্রয়োজনে প্রায়শঃই বাহিরের হোটেল গুলোতে খেতে যেতে হয়,তবে দ্রুতই নিজ রুমে প্রত্যাবর্তন করেন।থাকেন ও একাকী একটি হোটেল কক্ষে,কারো সাথে ভয়ে মিশতে চান না,দিনের বেলায়ও দরজা ভেজিয়ে নিজেকে কক্ষবন্দী করে রাখেন। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে তার মাঝে বেশ হতাশাও দানা বেঁধেছে, কারণ পরিবারের বাকিরা তাকে এদেশে এসে সংগ দেয়না,কদাচিৎ কালে ভদ্রে আসেন ;অথচ তিনি লাভের আশায় এখানে বেশ বড় বিনিয়োগ করে ফেলেছেন ,তার এই একাকীত্ত ও অতি সতর্কতা প্রথমদিকে তার মাঝে ব্যক্তিত্ত্বজনিত(Personality Disorder)সমস্যা তৈরী করলেও নিজ দেশের সহকর্মীর নিকট থেকে অযাচিত ব্যবহার পেয়ে হঠাৎ তা হতাশায় পরিণত হয়েছে।উল্লেখ্য জাপানীরা আবার বড্ড অভিমানী,অল্পতেই জীবন সংহারী সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। আমাদের দেশ ও কালচার সম্পর্কে কিছু অজানা আশংকা অহেতুক তাকে তাড়া করছে,যা রীতিমতো আমার নিকট ভিত্তিহীন মনে হলো,ভাষাগত সীমাবদ্ধতা সত্তেওআমি আমার সাধ্যমতো তাকে বাংগালী আতিথ্যের সাবলীল দিকগুলো তুলে ধরলাম,দু – একটি বিচ্ছিন্ন জঘন্য ঘটনা কক্ষনোই আমাদের ঐতিহ্যে ব্যঘাত ঘটাতে পারবে না,এ বিষয়ে আশস্ত করলাম।কিন্তু প্রতি বছর জুলাইয়ের এ সময়ে এক অজানা আশংকায় তার ভেতরটা আৎকে ওঠে। So as a part of Counselling i with the help of that Bangladeshi, assured him and narrated the ongoing successful operations of law enforcers against the militants and explained about the Special security measures taken by the state for the diplomatic zones & foreigners .তাকে কতোটুকু বোঝাতে পেরেছি জানিনা,কারণ আমার ম্যন্ডারিন বা জাপানী ভাষা সম্পর্কে খুব একটা জ্ঞান নেই,Google Translater- দিয়ে আর কতোদূর চলা যায়,কারণ মি.শাইতো তেমনইংরেজীও জানেন না, তাই কিছুটা অতৃপ্তি নিয়েই তাকে প্রাথমিকভাবে বিদায় দিয়েছি।আমার এই পোস্টের অন্যতম উদ্দেশ্য হচ্ছে আমি একজন ইংরেজী- ম্যন্ডারিন(চিনা)-জাপানী দোভাষীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি, যাতে পরবর্তী কাউন্সিলিং-এ তাকে পর্যাপ্ত সাহায্য করতে সক্ষম হই। তবে যতোই উদ্দেগ বা চিন্তাচ্ছন্ন থাকুক না কেন বিদায়ের সময়আমাকে ‘মিনোচান কম্বানুয়া’ অর্থাৎ শুভ রাত্রী বা শুভ সন্ধ্যা বলেই সে হাসিমুখে বিদায় নিয়েছে,যা জাপানীরা জাতিগতভাবে করায়ত্ত করেছে। আর এ বাক্যটি আমি শিখেছিলাম ১১ বছর আগেই , তাই বুঝতে অসুবিধা হয়নি,টোকিওর সিম্বেসী-র সেই আলীসান হোটেলে ১০৪-তম JSPN(Japanese Society for Psychiatry & Neurology) সম্মেলনে বৈজ্ঞানীক পেপার উপস্থাপনের প্রারম্ভে সম্মুখসারীর সব জাপানী বন্ধুদের ‘মিনোচান কম্বানুয়া’ বলেই সম্বোধন করেছিলাম,অনেক দিন পর আবার জাপানী নষ্টালজিয়ায় আক্রান্ত হলাম,অনুভূতি মন্দ নয় ; তবে এখনো ভাবছি দোভাষীহীন আগামী সেশনে কিভাবে তার সাথে আলাপণ চালাবো, কেন যে আরো কিছু জাপানী বাক্য শিখে এলাম না, এ আক্ষেপ আমার রয়েই যাবে।https://www.jspn.or.jp/modules/english/index.php?content_id=24