দূর্নীতি-রজঞ্জাল সরানোর সাহসিকতা সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব -রাই Reformist Personality –যা আমাদের মতো রাষ্ট্রের জন্য অত্যাবশ্যক।
অধ্যাপক ডঃ এম. এস. কবীর জুয়েল।
ছেলেটিকে কেন আমরা প্রাণখুলে বাহাবা দিচ্ছিনা, কেন অকুন্ঠ সমর্থণ করছিনে,কেন # ট্যগ দিয়ে সোস্যাল মিডিয়ায় ওর প্রতি আরো অধিক প্রশংসাসূচক বাক্য বর্ষণ করছিনে?
ঢাকা ভার্সিটির থিয়েটার ও পারফর্মিং আর্টস এর ছাত্র হওয়া সত্তেও সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য নিজেকে অপ্রয়োজনীয় পথনাট্যে নিয়োজিত করেনি, কপালে টিপ পরে শঙ সেজে জাতে ওঠার প্রতিযোগিতায় নামেনি বরং সে রাষ্ট্রের ভেতরকার যে করুণ দূর্নীতিগ্রস্ত চিত্রটিকে নিজের সাহসী পদক্ষেপের মাধ্যমে তুলে ধরেছে, এ জন্য তাকে আমরা “Reformist —-of the Year Award” দেয়ার প্রস্তাব রাখতেই পারি।
শুধু রেল বা ট্রেনের টিকেটে জালিয়াতি নয়, মোটর বাইক নিষিদ্ধের সুযোগে বাস, কোচ ৫-৬ গুন বেশী ভাড়া নিয়েছে, ঈদ এলেই পরিবহণ সেক্টরের সবখানে নৈরাজ্য আর মাত্রাতিরিক্ত ভাড়া হাঁকানোর মহোৎসব শুরু হয়, সিভিল অ্যাভিয়েশন সহ সকল সেক্টরকে জঞ্জালমূক্ত করার পদক্ষেপ হিসেবে যুবকের এই ব্যতিক্রমী প্রতিকী প্রতিবাদ চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। Reformers has a strong moral compass and seeks to improve the world around them.
ঈদের জন্য ৬৮০ টাকা দামে ৩টি টিকেট আগেই Online এ booked করে এবং Payment option এ য Mobile pay (bkash) এর মাধ্যমে তা পরিশোধ করে কিন্তু রেলের অসাধু কারবারিদের শঠতার কারনে সে টিকেট ৩টি download করতে ব্যর্থ হয়, তাই এ বিষয়ে সমাধান চাইতে সে তাৎক্ষণিকভাবে কমলাপুর টিকেট কাউন্টারে যায়, অনেক অনুনয় -বিনয় করে চেষ্টা করে যেন তার Booked Tickets তাকে দেয়া হয়, কারন তার বৃদ্ধা মা সহ পরিবারকে ঈদ পালনের জন্য দেশে পাঠাতে হবে।
কমলাপুর রেলস্টেশনের জনৈক ২ জন কর্মকর্তা তাকে নানাভাবে বিভিন্ন কথা বলে প্রত্যাখ্যান করতে থাকে, তারপরও সে অনুরোধ অব্যাহত রাখলে, কৌশলে তাকে দেখানো হয় যে, তার ক্রীত টিকেট গুলো blocked হয়ে গেছে, কিছুক্ষণ পর তার টিকেট গুলো ঠিক তার উপস্থিতিতেই আরেকজনের কাছে দিগুন দামে তারা বিক্রি করে দেয়। এ অপমান আর গ্লানি মোচনের জন্য অনেকেই হয়তো নিজ বাড়িতে যেয়ে রেলের কর্মকর্তাদের গালিগালাজ আর খিস্তিখেউড় করে সব অনাচার মেনে নিয়ে পুনঃরায় স্বাভাবিক জীবনে অভ্যস্ত হতেন আর ক্রমাগত ঘুষের বলয়ে নিজেকে সঁপে দিতেন, এ তরুণ তা করেনি, সে তাৎক্ষনিকভাবে কমলাপুরের প্ল্যাটফর্মকে বেছে নিয়েছে তার প্রতিবাদী ক্ষেত্র হিসেবে এবং টানা ১০ দিন যাবত নানা ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে একাই শীর উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে এবং রেলের সমূদয় দূর্নীতি আর অসাধুতার বিরুদ্ধে সোচ্চার কন্ঠে প্রতিবাদী কবিতা, গান গেয়ে চলেছে, তার এ অভিনব একক প্রতিবাদে ধীরে ধীরে অনেকেই সামিল হচ্ছেন, এবং জাতীয় দৈনিক গুলোতে সে স্থান করে নিয়েছে; আমরাও আছি তার সাথে, অব্যাহত থাকুক তার এ সাহসী পদক্ষেপ, রেলসহ পরিবহন সেক্টরের সকল ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার অবসান হোক, মানুষ ধর্মীয় উৎসব এর দিনগুলোতে নিঝঞ্ঝাটভাবে বাড়িতে বেড়াতে যাক, তরুণের এ চেষ্টায় অন্তত রেলের পেটমোটা ধাড়াস ইদুরগুলো নড়েচড়ে বসুক, Reformed হোক দীর্ঘ দিনের ঘুঁণে ধরা সমাজ, এ সমাজে এরুপ প্রতিবাদী মানুষদের ঢল নামুক, ধুয়ে মুছে পরিস্কার হয়ে যাক সকল দূর্নীতি আর কালোবাজারিদের আখড়া। আমরা এ তরুণের ৬ দফা দাবীর প্রতি নিরংকুশ সমর্থণ জানাচ্ছি —
১. সহজ.কম কর্তৃক যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে অথবা সহজকে বয়কট করতে হবে।
২. টিকেট সিন্ডিকেট বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৩. টিকেট ক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্ব সাধারণের সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. ট্রেনের জনসাধারণের জানমালের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
৫.ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্য সম্মত স্যানিটেশন ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৬. ট্রেনের সীট সংখ্যা বাড়ানো অথবা ট্রেনের সংখ্যা বাড়াতে হবে। তার সঙ্গে সঠিক সেবার মান ও তথ্যের জবাবদিহিতা নিশ্চিতে শক্তিশালী মনিটরিং টিম গঠন করতে হবে।
আশা করি অচিরেই রেলে সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়ে, তা প্রতিটি পরিবহন সেক্টরকে লো করবে।