জহির রায়হানের পুত্র অনল রায়হানের হতাশা…

অধ্যাপক ডঃ এম. এস. কবীর জুয়েল।

ভেবেছিলাম ২০২৪ এর এই ডিসেম্বরে নতুন পরিবেশে নতুন করে আজ (১৪/১২/২৪) ‘বুদ্ধিজীবী দিবস’ নিয়ে আলোচনা হবে, গণ ধারার গতানুগতিক চিন্তা থেকে দলগুলো বের হয়ে আসবে, কিন্তু তেমন -টি এবারো দেখা গেলোনা, ক্ষমতা দখলের রাজনীতি-র জন্য আমাদের অনেকেই সঠিক ইতিহাস খুঁজে পেতে আগ্রহী নই, তবে এই দল গুলোর নতুন প্রজন্মেরা ঠিক-ই ধীরে ধীরে বুঝতে পারছে — ১৯৭২ এর ১০ ই জানুয়ারী এ দেশের অন্যতম বুদ্ধিজীবী ও মূক্তিযোদ্ধা জহির রায়হান-কে যারা গুম করেছে, মূলত: তারাই ১৪-ই ডিসেম্বর চীনপন্থী ও নিরপেক্ষ সব্যসাচী স্পষ্টভাষী বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করেছে; ভবিষ্যতে অবশ্য-ই এই রহস্য উম্মোচিত হবে ঈন্সাল্লাহ; এবং প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। জহির রায়হান সাহেবের একমাত্র ছেলে অনল রায়হানকে ও প্রশ্ন করেছিল একজন সাংবাদিক(Shahid Alam) কিন্তু আওয়ামী লীগের পুরো আমল জুড়ে তিনি এসব বিষয় এড়িয়ে গেছেন, তবে তার মনেও একই চিন্তা বারংবার উঁকি দেয়, কিভাবে এবং কেন আমার বাবা স্বাধীন বাংলাদেশে লাপাত্তা হয়ে গেলো???আজো হতাশ চিত্তে সে প্রশ্নের উত্তর সে খুঁজে ফিরছে….. Even IO(Investigation Officer) of that case of Zahir Raihan was absconded in front of the press club after finishing a press conference about the missing issue of Zahir Raihan. Everything happened on January 1972…নিম্নোক্ত সাক্ষাৎকার ও প্রখ্যাত আদর্শবান বামপন্থী নেতা নির্মল সেনের নিজের জবানবন্দীতেও উঠে এসছে জহির রায়হানের অন্তর্ধানের বিষয়টি —সত্যজিত রায়: জহিরের ব্যাপারটা কিছু জেনেছো? শাহরিয়ার কবির: তাকে সরিয়ে ফেলার পেছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আমরা ব্যক্তিগতভাবে তদন্ত করে যা বুঝতে পেরেছি তাতে বলা যায় ৩০ জানুয়ারি দূর্ঘটনায় তিনি হয়তো মারা যাননি। তারপরও দীর্ঘদিন তাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল বলে অনেকে মনে করেন। সত্যজিত রায়: স্ট্রেঞ্জ! জহিরকে বাঁচিয়ে রাখার পেছনে কারণ কি? শাহরিয়ার কবির: সেটাই ষড়যন্ত্রের মূলসূত্র বলে ধরছি। মিরপুর দূর্ঘটনায় তার মৃত্যু হলে গভীর ষড়যন্ত্র মনে করার কারণ ছিল না। আমি যতদূর জানি, বুদ্ধিজীবিদের হত্যার তদন্ত করতে গিয়ে তিনি এমন কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছিলেন যা অনেক রথী-মহারথীর জন্যই বিপজ্জনক ছিল, সেজন্য তাকে সরিয়ে ফেলার প্রয়োজন ছিল॥”(সাক্ষাৎকার : সত্যজিত রায় / সাপ্তাহিক বিচিত্রা – ০১ মে, ১৯৯২) ২.”… সাম্প্রতিককালে জহির রায়হান নিরুদ্দেশ হওয়া নিয়ে নতুন তথ্য শোনা গেছে। বলা হয়েছে – পাকিস্তানি হানাদার বা অবাঙালিরা নয়, মুক্তিযোদ্ধাদের একটি অংশই জহির রায়হানকে খুন করেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের এ অংশটির লক্ষ্য ছিল – বাংলাদেশকে স্বাধীন করা এবং সঙ্গে সঙ্গে বামপন্থী বুদ্ধিজীবিসহ সামগ্রিকভাবে বামপন্থী শক্তিকে নি:শেষ করে দেয়া। এরা নাকি বামপন্থী বুদ্ধিজীবিদের হত্যার একটা তালিকা প্রণয়ন করেছিল। এদের ধারণা এ তালিকাটি জহির রায়হানের হাতে পড়েছিল। জহির রায়হানও জানত তার জীবন নিরাপদ নয়। তবুও সে ছিল ভাইয়ের শোকে মূহ্যমান। তাই শহীদুল্লাহ কায়সারের নাম শুনেই সে ছুটে গিয়েছিল মিরপুরে তারপর আর ফিরে আসেনি। এ মহলই তাকে ডেকে নিয়ে খুন করেছে। তাহলে কোনটি সত্য? জহির রায়হানকে কারা গুম করেছে? পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা, আল বদর, আল শামস্, না রাজাকার? নাকি মুক্তিবাহিনীর একটি অংশ? স্পষ্ট করে বললে বলা যায় – মুক্তিবাহিনীর এ অংশটি মুজিব বাহিনী।”— নির্মল সেন / আমার জবানবন্দি ॥ [ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ – ফেব্রুয়ারি, ২০১২ । পৃ: ৪০৫-৪০৬]

https://www.facebook.com/share/p/18MYuwhADk/

Leave a Comment